“নৌকাডুবি” (Rabindranath Tagore) আর “লাপাতা লেডিজ” (Kiran Rao পরিচালিত সিনেমা) – এই দুটি গল্পের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়, যদিও সময়কাল, প্রেক্ষাপট ও পরিবেশন ভিন্ন।
সাদৃশ্য:
- পরিচয় বিভ্রান্তি ও ভুলবসতি:
- “নৌকাডুবি”-তে একটি নৌকাডুবির ফলে রমেশ ভুলবশত অন্য এক মেয়েকে নিজের স্ত্রী বলে গ্রহণ করে।
- “লাপাতা লেডিজ”-এ ট্রেনে বিয়ের পর এক নববধূ হারিয়ে যায়, এবং অন্য এক মেয়ে তার জায়গা নেয়।
- নারী চরিত্রদের আত্ম-অনুসন্ধান:
- দুই গল্পেই নারীরা নিজেদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করে।
- “নৌকাডুবি”-তে কুন্দনন্দিনী তার স্বামীকে খুঁজে পেতে এবং নিজের পরিচয় পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট হয়।
- “লাপাতা লেডিজ”-এ ফিল্মের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্ররাও স্বাধীনতা এবং নিজেদের স্বর খুঁজে পেতে চেষ্টা করে।
- পুরুষ চরিত্রদের নৈতিক সংকট:
- রমেশ (নৌকাডুবি) ও দীপক (লাপাতা লেডিজ) – উভয়ই ভুল পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়ে নৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
- সামাজিক প্রথার প্রশ্নবিদ্ধতা:
- দুই গল্পেই বিয়ের প্রচলিত ধারণা, নারীর ভূমিকা ও সমাজের চাপকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
- “নৌকাডুবি”-তে বিধবা হওয়া, বিবাহ-বিচ্ছেদ ইত্যাদি সামাজিক নিয়মকে ট্যাগোর প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
- “লাপাতা লেডিজ”-এও নারীর স্বাধীনতা এবং সমাজের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
প্রধান পার্থক্য:
- “নৌকাডুবি” মূলত এক ধীরলয়ের সাহিত্যকেন্দ্রিক কাহিনি, যেখানে বাঙালি সমাজের গভীরতর বিশ্লেষণ রয়েছে।
- “লাপাতা লেডিজ” হাস্যরসের মিশেলে সমসাময়িক ভারতের নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে ফুটিয়ে তুলেছে।
- কুন্দনন্দিনী একটি ঐতিহ্যবাহী চরিত্র, যেখানে “লাপাতা লেডিজ” এর মেয়েরা অনেক বেশি স্বাধীনচেতা।
এই দুই গল্পের মূল কাঠামোতে মিল থাকলেও, তাদের প্রকাশভঙ্গি ও বার্তা আলাদা। কিন্তু দুটিই নারীর আত্মপরিচয়ের খোঁজকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে।